তাপসের কুকর্মের সবচেয়ে বড় শক্তি তার স্ত্রী ফারজানা আরমান মুন্নি। রূপচর্চা ও ফ্যাশন এক্সপোর্ট হিসেবে দেশে বিদেশে বেশ পরিচিত ফারজানা মুন্নী। ধনাঢ্য এই নারী জড়িত ছিলেন নানা রকম ব্যবসার সঙ্গে। বিভিন্ন মহল চর্চিত হয়, মুন্নী নানা অনৈতিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার এই অপকর্মে সহযোগিতা করতেন তাপস। মুন্নীর প্রথম ঘরের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন তাপস। সেই সুবাদে নিয়মিত দেখা হতো তাদের।

এক সময় তাপস মুন্নীকে আকৃষ্ট করে। তাদের মধ্যে শুরু হয় অসম প্রেম। অবাধ মেলামেশার এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। একাকিত্ব ঘোচাতে নিজের থেকে ১৪ বছরের ছোট তাপসকে জীবন সঙ্গী করেন মুন্নী। এছাড়াও মুন্নির আরেকটি পরিচয় হলো তিনি ছিলেন স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিউটিশিয়ান। স্ত্রী হাসিনার বিউটিশিয়ান হওয়ায় খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাপসের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে।

এরপর আরও বেগবান হয় তাপসের ভয়াবহ নোংরামি। গান বাংলার আঢ়ালে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নারী এবং মডেলদের নিয়ে রীতিমতো উন্নতমানের পতিতালয় খুলে বসেন তাপস। যেখানে বিভিন্ন ধরনের মাদকের পাশাপাশি নিত্য নতুন নারী সাপ্লাই করতেন তৎকালীন নামি-দামি নেতা, বড় বড় ব্যবসায়ী,কূটনৈতিকদের।

ইউক্রেন ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হতো এসব নারীদের, সাথে তো বোনাস হিসেবে শোবিজের বিভিন্ন মডেল যেমন: জনা,পিয়াস গং থাকতোই। নারী দিয়ে ভুলিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ফাঁদেও ফেলতো তাপস। এইভাবে ধূর্ত তাপস হাতিয়ে নিতো শত কোটি টাকার সরকারি প্রজেক্ট।

জানা যায়, স্ত্রী হাসিনার পায়ের তলা চাটা দালাল হওয়ায় কখনও কর দিতে হয়নি তাপসকে। রীতিমতো তারকাদের হেরেমখান বানিয়েছিলেন গান বাংলাকে যেখানে রাতভর নেশা আর যৌনতায় মত্ত থাকতো তারা।এছাড়াও তাপসের বিরুদ্ধে রয়েছে নারী পাচার সহ আরও অসংখ্য অভিযোগ। এক নারীতে তাপস কোনভাবেই সন্তুষ্ট ছিলেন না,তাই একাধিক নারী সঙ্গ ছাড়া তিনি ঘুমাতেই পারতেন না।

এছাড়াও প্রায়শই দেখা মিলতো ঢাকাই সিনেমা ছাড়াও কলকাতা এমনকি বলিউডের আইটেম গার্লদের। বিশেষ করে দেখা যেত, মিমি চক্রবর্তী, স্বস্তিকা মুখার্জি, নার্গিস ফাখরি সহ অনেক উঠতি তারকাদের। এমনকি নিজের মেয়ের বিয়েতে তাপস মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে সানি লিওনকে নাচাতে নিয়ে এসেছিলেন। সানি লিওনকে কোন ভাবেই বাংলাদেশে আসতে দেয়া যাবে না এমনটাই দাবি করেছিলেন দেশের আলেম সমাজ।

জনগণের ভাবাবেগকে চ্যালেঞ্জ করে ক্ষমতার অবৈধ প্রয়োগ করে চার্টার্ড বিমানে উড়িয়ে এনেছিলেন এই পর্ণো তারকাকে। জানা যায় পর্ণো তারকা সানিলিওনকে দেশে আনতে বিমান ভাড়াই দিয়েছিলেন ২.৫ কোটি টাকা। এছাড়াও ঢাকাই নায়িকা বুবলির সাথে প্রেম রয়েছে এমন ঘটনা নিয়ে অপু বিশ্বাসের সাথে কথা বলেন মুন্নি।

সেই কল রেকর্ড ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় রেকর্ডটি। যেখানে অপুকে মুন্নি বলেন,'তাপসের বাচ্চার মা হওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে বুবলি'। যা এমন পর্যায়ে যায় যে গুঞ্জন ওঠে শিঘ্রই বিয়ে করতে যাচ্ছে তাপস-বুবলি। তাছাড়াও ঢালিউডের অনেক নায়িকার সাথে অনৈতিক যৌন সম্পর্কে জড়িত তাপস এমন অভিযোগও ওঠে।

তবলা বাদক তাপস শেখ হাসিনা সরকারের বদৌলতে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অনুষ্ঠানের নামে। সরকারি এমন কোন সাংস্কৃতিক প্রজেক্ট ছিল না যা তাপস পেতেন না এবং এক একটি প্রজেক্ট যেন সোনার ডিম দেওয়া হাঁস হয়ে আসতো তাপসের কাছে। এযাবৎ সরকারি প্রজেক্টের নামে যে কত হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে দরবেশ তাপস তার কোন সঠিক তথ্য এখনও নেই।

এমনকি লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে কনসার্ট আয়োজনের দায়িত্ব নিতেন তিনি। বিশেষ করে দুই সিটি কর্পোরেশনে আয়োজিত লাল-সবুজের মহোৎসব, জয় বাংলা কনসার্ট, মুজিববর্ষের সকল প্রোগ্রাম। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাপস। জানা যায়, শিল্পীদের জন্য বরাদ্দ অর্থের ৮০ শতাংশই যেত তাপসের পকেটে। স্ত্রীর বদৌলয়ে বামুন যেন চাঁদ ধরতে যায়নি বরং চাঁদের মালিকই হয়ে গিয়েছিল।

প্রসঙ্গত ২০২২ সালে বরিশালে ‘জয়বাংলা উৎসব’ নামে অনুষ্ঠানে মিমি চক্রবর্তীসহ দেশের অনেক তারকাকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাপস। যেখানে উপস্থিত ছিলেন সালমান এফ রহমান। তাছাড়াও ছিলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। নিজের এমন প্রভাব তৈরি করে রেখেছিলেন যে, বাংলাদেশের জনপ্রিয় অধিকাংশ শিল্পী তাপসের পেছন পেছন ঘুরতেন। এমনকি এই মিডিয়া মাফিয়ার কোরবানির গরু কিনতে দলবেঁধে হাটে যেতেন শিল্পীরা কেবল একটা বড় আয়োজনে গান গাওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য।

তাপসের দুর্নীতির আরেকজন অংশীদার অবৈধ হাসিনা সরকারের অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। অনুসন্ধানে জানা যায় মুন্নির সাথে সখ্যতা থাকায় তাপস এবং ফারজানা মুন্নির বিয়েতে স্বাক্ষী ছিলেন  কামাল। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে নিজের বাবার পরিচয় দিতেন না। এই কামালকেই বানিয়েছিলেন অবৈধ বাবা। এই কামালের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে বিবিধ সুযোগ সহ হাতিয়েছেন শত কোটি টাকা।

এক সূত্রে জানা যায় তাপসের বুড়ো বউ মুন্নির ছিল ব্যাপক ঘনিষ্ঠতা। সেই সুযোগ নিয়ে দেশের ক্রীড়া অঙ্গনের ইভেন্টগুলো বাগিয়ে নিতো তাপস এবং সেখানকার অধিকাংশ বাজেটই গায়েব করে দিতো। এছাড়াও হাতিরঝিলের কনসার্টে ৪০ কোটি টাকা এবং ব্যাংক এ্যাসোসিয়েশনের প্রোগ্রামে ২৬ কোটি টাকা বেমালুম গায়েব করে দেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তাপস উঠতি মডেলদের নিজের রক্ষিতা হিসেবে করতেন ব্যবহার। বিনিময়ে তাদের কিনে দিতেন বিলাশবহুল গাড়ি, বাড়ি।